আপনারা যারা ফ্রিল্যান্সার হতে চান তারা অনেকেই জিজ্ঞেস করে থাকেন যে, ‘আউটসোর্সিং কি’ বা ফ্রিল্যান্সিং কি?’ আজকের লিখাটা মূলত তাদের জন্যই। ‘ফ্রিল্যান্সিং কি’ তা নিয়ে তো আমরা আগেই আলোচনা করেছি, এখন আমরা জানবো আউটসোর্সিং সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো?
আউটসোর্সিং কি?
আউটসোর্সিং এর অর্থ হলো কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির কাজ অন্য কোনো সোর্স বা উৎস হতে করিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া। তার মানে হলো – আপনি আউটসোর্সিং করছেন না বরং আপনাকে দিয়ে আউটসোর্সিং করানো হচ্ছে।
অর্থাৎ আপনি নির্দিষ্ট কোনো পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অন্য কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের যেকোনো ধরণের অনলাইন বা অফলাইন ভিত্তিক কাজ করে দেওয়ার মাধ্যমে আউটসোর্সিং এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
আপনি যে কাজে পারদর্শী সেই কাজের বিনিমিয়ে যে অর্থ প্রাপ্ত হোন, সেটাকে আউটসোর্সিং বলা হয়ে থাকে। এরকম বাইরের উৎস থেকে লোক নেওয়ার অনেক গুলো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেমনঃ ফাইভার, আপওয়ার্ক, পিপল পার আওয়ার ইত্যাদি।
এমনিতে তো আমাদের জীবনের চাকা ঘুড়ানোর জন্য আমাদের কাছে অনেক ধরনের অপশন বা চয়েজ রয়েছে। কেউ চাকুরী করে দিনাতিপাত করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তো কেউ আউটসোর্সিং করে ঘরে বসে আয় করার কথা ভাবছে।
আবার কেউ অনলাইন বিজনেস কিভাবে শুরু করতে হয় সেই সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করছে, তো কেউ চাকুরী ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিং কেন করবো সেই বিষয় নিয়ে গুগল ও ইউটিউবে ঘাটাঘাটি করছে।
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং করতে চান তাহলে আগে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এ দক্ষ হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে, যে দক্ষতার বিনিময়ে আপনি টাকা দাবী করতে পারবেন।
আপনি একটা দুইটা আউটসোর্সিং শেখার বই পড়ে সম্পূর্ণ আউটসোর্সিং সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন না, তার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্র্যাক্টিক্যালি কাজ করে সে কাজের প্রতি দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
এখন হয়তো আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং কাজ কিভাবে পাবেন বা অনলাইনে বেশি বেশি ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়ার উপায় গুলো কি কি? আসুন তবে আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাক- আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করার আগে আপনাকে অবশ্যই ঠিক করতে হবে যে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এ কোন ধরণের কাজ করবেন?
কারণ ফ্রিল্যান্সিং এ প্রচুর কাজের ক্যাটাগরি রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলোঃ প্রফেশনাল আউটসোর্সিং, আইটি আউটসোর্সিং, ম্যানুফেকচারিং আউটসোর্সিং ও প্রজেক্ট আউটসোর্সিং।
আপনি কোন ক্যাটাগরিতে কাজ করবেন ও কি কাজ করবেন তার উপর নির্ভর করছে আপনার আয়। আসুন জেনে নিই আউটসোর্সিং এর সেরা কিছু কাজের শাখাগুলোর সম্পর্কে –
(১) ডিজিটাল মার্কেটিং, পারসোনাল ব্র্যান্ডিং, এসইও এক্সপার্ট
(২) কন্টেন্ট রাইটি, কপিরাইটিং, ভিডিও এডিটিং, লগো ডিজাইন
(৩) গ্রাফিক্স ডিজাইন, ক্রিয়েটিভ ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন
(৪) ওয়েভ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট মেইন্টেইনেন্স, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
(৫) কাস্টমার সার্ভিস, কন্টেন্ট কিয়েটিং, সেলস এন্ড মার্কেটিং ইত্যাদি।
আরো দেখুনঃ আমাদের কোর্সগুলো
উপরোক্ত কাজগুলোর উপর যদি আপনি পুরোপুরি ভাবে দক্ষতা অর্জন করে ফেলতে পারেন তাহলে আপনি অনেক বেশি বেশি কাজ পাবেন।
তাই যারা ভাবছেন কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন তাদের জন্য একটা জিনিসই দরকার, আর সেটা হলো ‘ক্রিয়েটিভিটি’। ফ্রিল্যান্সিং ও ক্রিয়েটিভিটি এই দুটো জিনিস আউটসোর্সিং এর সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
ফ্রিল্যান্সিং যেমন ক্রিয়েটিভিটির উপর নির্ভরশীল, ঠিক তেমনি ক্রিয়েটিভিটি ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং এর কোনো অস্তিত্ব নেই, তাই আউটসোর্সিং এ এই দুটোর মধ্য থেকে একটি ছাড়া অন্যটিকে কল্পনা করা যায় না।
এখনতো বাজারে অসংখ্য রকমের ফ্রিল্যান্সিং শেখার বই পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো যে অভিজ্ঞ প্রফেশনালদের দ্বারা লিখা মানসম্মত বই তাতে কোনো সন্দেহ নেই, সবগুলোই ভালো বই।
কিন্তু সেরার উপরেও সেরা থাকে, সবার কাছে যে শুধু একটি বই ই ভালো লাগবে তা কিন্তু নই, একেক জনের একেক ধরণের দৃষ্টিভঙ্গির কারনে একেক রকম বই ভালো লাগে।
যেমন আমার কাছে মোঃ আমিনুর রহমান স্যারের আউটসোর্সিং এর ৪ টি খন্ডই অসাধারণ লেগেছে। আবার আপনারা চাইলে টেন মিনিট স্কুলের সম্পাদক জয়িতা ব্যানার্জীর ঘরে বসে আয় করুন (৪টি সহজ ধাপে ফ্রিল্যান্সিং শিখুন) বইটিও পড়ে দেখতে পারেন, খুবই সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় লিখা হয়েছে বইটি। একবার পড়ে দেখতে পারেন, আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিচ্ছি যে আপনি হতাশ হবেন না।
আপনারা চাইলে বই গুলো রকমারি ডট কম থেকে অনলাইনে অর্ডার করে বাড়িতে বসে অবসর সময়ে পড়তে পারেন। আশা করছি এই বইগুলো পড়লে আউটসোর্সিং সম্পর্কে আপনার ৮০% ধারণা পাওয়া হয়ে যাবে এবং অনেক কিছু নিত্য নতুন জিনিস সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা সবই উক্ত বইয়ে সুন্দর করে উল্লেখ করা আছে। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো সেই সম্পর্কেও সাজেশন দেওয়া আছে।
অথবা আপনি চাইলে উপরের লিংকে ক্লিক করেও দেখে নিতে পারেন আপনার বাজেট ও কাজ অনুযায়ী কোন ল্যাপটপটি উপযুক্ত।
আপনি যদি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান, তাহলে আপনি এই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন লাগে আর্টিকেল টি ঝটপট পড়ে আসতে পারেন। আশা করছি আপনার ভালো লাগবে।