ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো ? - Bhairab IT Zone

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো আপনি কি কোনভাবেই বুঝে উঠতে পারছনে না, তাই আজকেআমরা আলোচনা করব ফ্রিল্যান্সিং এ কোন ধরণের কাজের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় এবং আধুনিক পেশা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে। ছোট-বড় সকলের কাছে ফ্রিল্যান্সিং সমান ভাবে সমাদৃত হচ্ছে।

কেউ মোবাইলের মাধ্যমে ছোট খাটো মার্কেটিং করে নিজের হাত খরচ চালাচ্ছে তো কেউ ঘরে বসে ডেস্কটপে বসে নিজের ক্যারিয়ার গড়ছে।

আবার কেউ কেউ নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি কিংবা দৈনন্দিন কাজের ফাকে ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ছে ডাটা এন্ট্রি বা সোশ্যাল মার্কেটিং এর মতো কাজ নিয়ে।

মোট কথা হলো যারা ফ্রিল্যান্সিং করছে সবাই ই কমবেশি মোবাইল, ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ কম্পিউটার এবং পাম কম্পিউটার (ট্যাব) সব ধরণের ডিভাইস ই ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু সব ডিভাইস ই কি একই রকম সার্ভিস দিতে পারে? অবশ্যই না।

কাজের ধরণ ভিত্তিতে একেক ডিভাইস একেক রকম সার্ভিস দিয়ে থাকে। কারন ফ্রিল্যান্সিং এ ছোট-বড়-সহজ-জটিল সব ধরণের কাজই রয়েছে।

আপনি কখনোই মোবাইল দিয়ে ডেস্কটপের কাজ করতে পারবেন না অথবা ল্যাপটপের মতো আপনার ডেস্কটপকে সহজেই বহন করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন না।

এই বহনযোগ্য সুবিধার জন্যই অনেক ফ্রিল্যান্সাররা যারা প্রতিনিয়ত ভ্রমনরত অবস্থায় থাকে যেমন ব্লগার, রাইটার কিংবা ফটোগ্রাফার তারা ল্যাপটপকে সবসময় প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাহলে আসুন জেনে নিই কাজের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালোঃ-

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য যা যা প্রয়োজন

সাধারণ মানের ল্যাপটপ

টেকনোলোজির যুগে প্রত্যেকটা দেশই উন্নয়নের লক্ষ্যে উন্নতমানের প্রযুক্তির সাথে তালে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটালাইজেশনের দিকে।

সেই হিসেবে প্রায় সব ধরণের প্রযুক্তির সাথেই আমাদের দেশের মানুষও খুব ভালো ভাবেই পরিচিত। মোবাইলের পর ল্যাপটপ হলো এমন একটা ডিভাইস যেটার প্রতি ছোট বড় সবারই কমবেশি আকর্ষণ রয়েছে।

কেউ গেমিং এর জন্য ল্যাপটপ ব্যবহার করে, কেউ অফিসের প্রেসেন্টেশন তৈরী করতে ল্যাপটপ ব্যবহার করে তো কেউ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ল্যাপটপ ব্যবহার করে। কাজের ক্ষেত্রে একেক টি ল্যাপটপ একেক রকমের সার্ভিস দিয়ে থাকে।

আপনি যদি হালকা বা কম লোড নিবে এমন কোনো কাজের জন্য ল্যাপটপ কিনতে চান তাহলে সাধারণ মানের ল্যাপটপ দিয়েই কাজ হয়ে যাবে, যেমনঃ ব্লগিং, কন্টেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি, এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং প্রোগ্রামিং সহ আরোও অসংখ্য ছোটখাটো কাজ।

উন্নত মানের ল্যাপটপ

ফ্রিল্যান্সিং এ অনেকরকম কাজের সেক্টর আছে যেগুলোর মধ্যে অনেক জটিল এবং এক্সপেন্সিভ কাজও আছে, সেগুলোকে অনেক সতর্কতার সহীত করতে হয়।

আর যদি আপনি ঠিক সেরকম ই ভারী লোড সম্পন্ন কাজে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে আপনাকে হাই কনফিগারেশনযুক্ত এডভান্সড লেভেলের ল্যাপটপ কিনতে হবে।

যেটা দিয়ে আপনি ওয়েব ডিজাইন, ওয়েভ ডেভেলপমেন্ট, গেমিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়ার্ডপ্রেস, ভিডিও এডিটিংসহ আরোও অনেক ধরণের জটিল ও কুটিল কাজ অনায়াসে করে ফেলতে পারবেন কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই।

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সার হতে চান?

বাজেট

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো তা তো জানা হলো, তাহলে চলুন এবার জেনে নিই কোন ল্যাপটপের জন্য আপনাকে কত টাকা বাজেট ফিক্স করতে হবে।

নরমাল বা স্ট্যান্ডার্ড লেভেলের ল্যাপটপ এর জন্য আপনাকে বেশি টাকার বাজেট গুনতে হবে না। ২৫,০০০ – ৪০,০০০ হাজার টাকার মধ্যে আপনি ভালো মানের একটি ল্যাপটপ কিনে ফেলতে পারবেন।

তো যারা কমদামের মধ্যে ভালো ল্যাপটপ কিনতে আগ্রহী তারা নিম্নে দেওয়া ল্যাপটপের তালিকা গুলো দেখে নিতে পারেনঃ

  • Dell Inspiron 14-3473 N4000
  • Lenovo Ideapad G4135
  • HP 15-db0000au
  • Asus X540YA
  • Acer Aspire ES1-533

আর যারা ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ল্যাপটপের সাহায্যে যেকোনো ধরণের জটিল এবং এক্সপেন্সিভ কাজ স্বাচ্ছন্দ্যে করতে চান তারা উন্নতমানের ল্যাপটপ কিনে ফেলতে পারেন।

কিন্তু এর জন্য আপনাকে বাজেটের পরিমান একটু নয় বরং অনেকটাই বাড়াতে হবে। কারন “জিনিস যেটা ভালো, দাম তার একটু বেশিই”। ৭০,০০০ – ৮০,০০০ হাজার টাকার মধ্যে আপনি খুব ভালো ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কিনতে পারবেন।

তো যারা বেশি বাজেটের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য সেরা ল্যাপটপ কেনার কথা ভাবছেন তাদের জন্য নিম্নে কিছু ল্যাপটপের তালিকা দেওয়া হলোঃ

Asus Vivo Book 15 K513EA Core i5 11th Gen 15

Dell XPS 13 7390 Core i7 10th Gen Touch Screen Laptop

MacBook Pro

HP Elite Dragonfly

Lenovo Chromebook

Gigabyte Aero 15

Razer Blade Pro 17

Dell XPS 15

যেগুলো দেখে ল্যাপটপ কিনবেন

ভালো মানের ল্যাপটপ কেনার আগে যে জিনিস গুলো বিশেষ ভাবে খতিয়ে দেখবেন সেগুলো হলো প্রসেসর, র‍্যাম এবং হার্ডডিস্ক। কারন র‍্যাম এবং হার্ডডিস্ক খারাপ হয়ে গেলে সেগুলো ঠিক করা যায় কিন্তু প্রসেসর নষ্ট হয়ে গেলে সেটা আর ঠিক করা যায় না।

তাই প্রসেসরের ক্ষেত্রে সব সময় সতর্ক থাকবেন। আর বাহ্যিক ভাবে যেগুলো দেখবেন সেগুলো হলো স্ক্রিনের রেজুলেশন ঠিক আছে কিনা, কালার কম্বিনেশন ঠিক আছে কিনা, সাউন্ড সিস্টেম ঠিক আছে কিনা, গরম বাতাস বের হওয়ার ভেন্টিলেশন টা ঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা, কীবোর্ড ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন কিনা সহ আরোও ছোট খাটো খুটি নাটি বিষয় গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখবেন।

এমনিতে প্রায় সব ল্যাপটপই নতুন নতুন অবস্থায় অনেক ফাস্ট কাজ করে কিন্তু বছর দুয়েক পরেই সেটা স্লো হয়ে যায়। তাই যখনই দেখবেন যে ল্যাপটপ স্লো হয়ে যাচ্ছে তখনই SSD+Extra RAM লাগিয়ে নিবেন, দেখবেন যে আপনার ল্যাপটপ আবার ঘোড়ার মতো দৌড়াতে শুরু করেছে।

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং- এ দক্ষ হওয়ার জন্য কি কি করবেন?

আরো পড়ুনঃ অনলাইন এ বেশি বেশি ফ্রীলান্সিং কাজ পাওয়ার উপায়

আপনার সিদ্ধান্ত/বাছাই করুন

একেক রকম ল্যাপটপের একেক রকম বৈশিষ্ট্য। একটা ল্যাপটপেই আপনি সবগুলো বৈশিষ্ট্য পেয়ে যাবেন এমনটা কিন্তু নয়।

ধরুন, আপনি HP ব্র্যান্ডের একটা ল্যাপটপ কিনতে যাচ্ছেন, আপনি একই দামের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ল্যাপটপটিই পাবেন কিন্তু তাদের ডিজাইন গুলো খুব ব্যাকডেটেড।

এই ল্যাপটপের ফিচার এবং অন্যান্য ডিজাইনগুলো সব একই রকমের, আর কীবোর্ডও তেমন একটা কমফরটেবলি ইউজ্যাবল না। এমনিতে হার্ড এবং রাফ ভাবে ব্যবহার করার জন্য একদম পারফেক্ট যেটা অন্য ল্যাপটপের ক্ষেত্রে সম্ভব না।

আবার আপনি Asus ব্র্যান্ডের ল্যাপটপও নিতে পারেন। এটা দেখতে অনেক সুন্দর, এটার ডিজাইনগুলো ও চোখে পড়ার মতো, র‍্যাম এবং হার্ডডিস্ক বদলানোর সুযোগ আছে, সহজে বহনও করা যায়। তবে এর ফিচার সংখ্যা বা ফিচার ব্যবহারের সুবিধা খুবই কম।

তাই আপনি যে ব্র্যান্ডের ল্যাপটপই কেনেন না কেন এরকম কিছু কিছু সার্ভিসের ক্ষেত্রে আপনাকে সামান্য কম্প্রোমাইজ করতেই হবে। এখন সিদ্ধান্ত আপনার, আপনি কোনটা নিতে চান।

আপনি আপনার কাজের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক ল্যাপটপ টি বেছে নিন।