ফ্রিল্যান্সিং কি? তা তো আমরা আগেই জেনেছি, এখন আসুন দেখেন নেই ফ্রিল্যান্সিং- এ দক্ষ হওয়ার জন্য কি কি করবেন –
সেলফ ডেভেলপমেন্টের জন্য যা করবেন
আপনি যে কাজে দক্ষ, সে কাজটি ঠিকমতো চর্চা করুন এবং আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজের খোঁজ করে তা সম্পন্ন করে ক্লায়েন্টের কাছ থেকে পজেটিভ ফিডব্যাক নিন।
এটাই আপনার উন্নতির চাবিকাঠি এবং সাফল্যের দ্বারে যাওয়ার প্রথম ধাপ। যখন আপনি সফল হতে শুরু করবেন, তখন কোন সুযোগগুলো আপনার জন্য অধিক কার্যকরী সেগুলো সঠিক ভাবে নির্বাচন করুন। সময়ের উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ ব্যবহার করুন।
সেলফ ডেভেলপমেন্ট করার পর নিজেকে তুলে ধরার কিছু প্রক্রিয়া সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং এবং ক্রিয়েটিভিটি
নিজেকে তুলে ধরার প্রক্রিয়া
- নিজের প্রোফাইল উন্নত করুন এবং নিজের সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে নিজের পোর্টপোলিও তৈরী করুন।
- কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ এবং অভিজ্ঞতার জানান দিন।
- নিজের একটি সিগনেচার তৈরী করুন যেটা আপনার কাজের ক্ষেত্রে আপনার পরিচয় বহন করবে।
- মৌলিক কাজের ক্ষেত্রে সবসময় নিজের ছবি এবং সিগনেচার ব্যবহার করবেন।
- নিজের প্রচারণা চালান। যেমনঃ অন্যের পোস্টে মন্তব্য করুন, সোশ্যাল সাইটের পরিপূর্ণ ব্যবহার করুন, অন্যদের সাথে যোগাযোগ রাখুন, সেবামুলক কাজ করুন, অন্যকে শেখান, বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করুন, লিফলেট বা পোস্টার বিতরণ করুন।
পেশাদারিত্ব দেখানো
একজন ফ্রিল্যান্সারের পরিচয় হলো তিনি একজন পেশাদার। এখানে পেশাদার বলতে শুধু চাকুরীজীবীদের নয় বরং উদ্যাক্তাদেরকেও বুঝানো হয়েছে।
আপনি যে একজন পেশাদার সেটা কিভাবে প্রকাশ করবেন বা হিসেব করবেন? এর জন্য অনেকগুলো উপায় রয়েছে, যেগুলোর দ্বারা আপনি সহজেই প্রকাশ করতে পারবেন যে আপনি একজন পেশাদার উদ্যাক্তা বা চাকুরীজীবী। উপায়গুলো হলোঃ
- পেশাদাররা কখনো বিনা টাকায় কাজ করেন না, তাই কোনো কাজে হাত দিলে অবশ্যই আগে পারিশ্রমিকের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
- পেশাদাররা বাকিতে কাজ করেন না, আপনি যদি পেশাদারিত্ব দেখাতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই নগদে পরিশোধ করতে হবে অথবা অর্ধেক টাকা অগ্রীম এবং অবশিষ্ট টাকা কাজের শেষে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি নিতে হবে।
- একজন পেশাদার একটি কাজ শুরু করলে অবশ্যই তা শেষ করেন। তিনি কখনো অর্ধেক কাজ শেষ করে ফেলে রাখেন না বা কাজ ঝুলিয়েও রাখেন না।
- একজন পেশাদার কখনো তার কাজের জন্য গবেষণাকার্য বা যোগাযোগের কোনো ঘাটতি রাখেন না।
- একজন পেশাদার সবসময় সময়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন, তিনি সময়ের কাজ সময়ে করেন এবং ক্লাইন্টকে সেই কাজ অন-টাইম ডেলিভারী দেন।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং কাজ কিভাবে পাবেন?
আরো পড়ুনঃ কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন?
ক্লাইন্টের মন জয় করুন
একটি কাজের জন্য ক্লাইন্টের সামনে হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সার থাকেলেও কাজ কিন্তু একজনই পায়। যে ব্যাক্তি কাজ পেয়েছে সে ক্লাইন্টের মনের মতো করে নিজেকে উপস্থাপন করেছে বলেই পেয়েছে।
সে এমনভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছে এবং ক্লাইন্টের সামনে নিজেকে তুলে ধরেছে যাতে ক্লাইন্টের মনে হতে বাধ্য হয় যে সে ই একমাত্র ব্যাক্তি যে কিনা আমার কাজটি করতে পারবে।
- ক্লাইন্টের কাজের প্রতি আগ্রহ দেখান
- ক্লাইন্ট কি বোঝাতে চাচ্ছেন তা বুঝোন
- কোনো কনফিউশান থাকলে ক্লাইন্টকে প্রশ্ন করুন
- বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের সুফলগুলো দেখান
- ক্লাইন্টকে অযথা বিরক্তিমূলক কথা বলার থেকে বিরত থাকুন
যে ভুলগুলো করা থেকে বিরত থাকবেন
মানুষ মাত্রই ভুল। মানুষ ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু সেই ভুল থেকে যদি মানুষ শিক্ষা না গ্রহণ করতে পারে তাহলে এই রকম ভুল কখনো না হওয়াই ভালো।
ভুলগুলো হলো
- নিজের পরিচয় তুলে ধরতে ব্যর্থ হওয়া
- ব্যস্ততা দেখানো
- ক্লাইন্টের সাথে যোগাযোগের ঘাটতি
- দেরীতে জবাব দেওয়া ও ভাষাগত ভুল করা
- আগ্রহের ঘাটতিসহ আরোও অনেক ভুলত্রুটি রয়েছে যেগুলো করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সার হতে চান?
সময়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া
সময়ের কাজ সময়ে করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। কাজকে কখনো ফেলে রাখতে নেই। কারন কাজ ফেলে রাখলে কাজের পরিমান বাড়বে বৈ কমবে না। তাই সময়ের কাজ সময়ে করে সময়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে জীবন গঠনের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় শ্রেয়।
সময়ের উপযুক্ত ব্যবহার
- একটা রুটীনের মধ্যে আসুন
- অভিজ্ঞতার আলোকে কাজ করুন
- দিনে বা রাতে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করুন
- প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাতের নাগালের মধ্যে রাখুন
- প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিন
- একটি কাজ বারবার না করে একবারে করুন
- শরীরকে বিশ্রাম নিতে দিন।
অর্থাৎ, উপরোক্ত কাজগুলো করা হলে বা সঠিকভাবে মানা হলে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সফলতা অর্জন করা শুধুমাত্র বলার অপেক্ষা। নিজেকে একজন সফল এবং দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তৈরি করার জন্য উপরোক্ত বিষয়াবলির মহাত্ম ও গুরুত্ব অপরিসীম।