ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ - Bhairab IT Zone

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফ্রিল্যান্সিং এ কোন ধরণের কাজ করবেন?

এবং ফ্রিল্যান্সিং এ কাজের ধরণ বুঝতে হলে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং কি তার উপর একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং এর নির্দিষ্ট কোনো প্রকারভেদ নেই, এটা অনেক প্রকারের হতে পারে, যেমন-

ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফি, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতা, ফ্রিল্যান্স রাইটার, ফ্রিল্যান্স ডাটা এন্ট্রি, ফ্রিল্যান্স লগো ডিজাইনার, ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার ইত্যাদি। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আপনি ঠিক কত ধরনের কাজ করতে পারবেন তার কোন শেষ নেই।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এই প্রক্রিয়াতে আপনিই সর্বেসর্বা। আপনার মাথার ওপর ছুড়ি ঘোরানোর কেউ নেই, এখানে আপনিই প্রধান। এমনকি এখানে ৯টা-৫টা পর্যন্ত অফিস বা কাজ করারও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

আজ আমি এমনি কিছু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে আলোচনা করি যেগুলো সচরাচর ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে জনপ্রিয় বা অনেক ফ্রিল্যান্সাররাই করে থাকেন। যেমনঃ

 ডাটা এন্ট্রি

ডাটা এন্ট্রিকে সবচেয়ে সহজ কাজ বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না। বরং অন্য যেকোনো কাজ ডাটা এন্ট্রির থেকে কঠিন এই কথাটা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে। ডাটা এন্ট্রির কাজ বলতে মূলত টাইপ করাকে বুঝায়। এ কাজে সাধারণত একটা পিডিএফ ফাইল দেয়া হয়ে থাকে এবং বর্ণিত থাকে যে ‘ওয়ার্ড টাইপের কাজ’।

ডাটা এন্ট্রির মূলত অনেক গুলো রুপ আছে, কখনো আপনাকে এক্সেলে স্প্রেডসিট বা এক্সেস ডাটাবেস করে দিতে বলতে পারে আবার কখনো এক্সেস রিপোর্ট আকারে করে দিতে বলতে পারে। এই কাজ সহজ বিধায় সবাই এটা করতে পারে, আহামরি কোনো নিয়ম কানুনও নেই।

যেকোনো চাকরিজীবী চাইলে তার কাজের শেষে বাড়তি ইনকামের জন্য ডাটা এন্ট্রির কাজকে পার্টটাইম জব হিসেবে নিতে পারে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন বা লোগো ডিজাইন

ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন। এই কাজের এতো জনপ্রিয়তার প্রধাণ ও অন্যতম কারন হলো আকর্ষণীয়তা এবং সহজবোধ্যতা। আমরা অনলাইনে ঢুকে যা কিছু দেখি তা সবই গ্রাফিক্সের অবদান। যেমনঃ কভার পেইজ, নিউজপেপার, বুক কভার পেইজ, বিজ্ঞাপন এবং আলোকচিত্রসহ আরো অনেক কিছু।

ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত যেসব গ্রাফিক্সের কাজগুলো করে থাকে তা নিম্নরুপঃ

  • ছবি বা ফটোর ব্যাকগ্রাউন্ড ইডিট করা বা পরিবর্তন করা,
  • বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যানার তৈরি করা,
  • ভিজিটিং কার্ড, বিজনেস কার্ড বা লিফলেট তৈরি করা,
  • ওয়েবপেইজের জন্য ডিজাইন করা যা (পিএইচডি) নামে পরিচিত,
  • টি-শার্ট ডিজাইন করা,
  • লগো ডিজাইন করা,
  • কার্টুন চিত্র বানানো,
  • সিনেমার বা নির্বাচনের জন্য পোস্টার বানানো,
  • গেইমিং এর জন্য ডিজাইন তৈরি করা,
  • বিভিন্ন ইউটিউব ভিডিওর জন্য টেমপ্লেইট তৈরি করা,
  • বিভিন্ন সাইটে পোস্ট করার জন্য গিগ বা পিন তৈরি করা।

এসকল কাজ ছাড়াও আরোও অনেক ধরণের গ্রাফিক্সের কাজ আছে যা ফ্রিল্যান্সাররা করে থাকেন।

ওয়েব ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট

ওয়েব ডিজাইন’ বা ‘সাইট তৈরি’ দুটো একই অর্থে ব্যবহৃত হয়, ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন। এই কাজের সবচেয়ে সহজ দিক থেকে শুরু করে কঠিন দিক পর্যন্ত মোটামুটি সব ধরনের কাজই ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করানো হয়ে থাকে।

ওয়ার্ডপ্রেস, এলিমেন্টর, জুমলা ও ডিভির মতো আরোও অনেক থিম রয়েছে যেগুলোর দ্বারা সম্পূর্ণ সাইট তৈরি করা সম্ভব। কিছু কিছু সাইট তৈরি করতে গেলে মাঝে মধ্যে কোডিং এর প্রয়োজন পড়ে।

যদি ওয়েব ডিজাইনার কোডিং সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা থাকে তাহলে কোনো সমস্যা হয় না, আর যদি না থাকে তাহলে প্রোগ্রামারদের দ্বারা সাইট তৈরির কাজ করাতে হয়। তাছাড়া ওয়েব ডিজাইনারের কিছু কাজ আছে যেগুলো করার ফলে তাকে আর ওয়েব ডিজাইনার বলা হয় না, সে হয়ে উঠে ওয়েব ডেভেলপার।

কাজগুলো যেমনঃ

  • সাইটে কোনো বাগ বা ইরোর দেখা দিলে তা দূর করা,
  • সাইটের ভুল ত্রুটি খুজে বের করে তার সমাধান করা,
  • সাইটে নতুন কিছুর সংযোজনের প্রয়োজন হলে তা যোগ করা,
  • সাইটকে বিভিন্ন হ্যাকার বা ম্যালওয়ার থেকে রক্ষা করা,
  • সাইটের ট্রাফিক যেন বেশি হয় সেই চেষ্ঠা চালিয়ে যাওয়া।

উপরোক্ত কাজগুলো ওয়েব ডেভেলপার’রা করে থাকেন। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বা ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ওয়েব ডেভেলপারদের প্রচুর পরিমানে চাহিদা রয়েছে। 

প্রোগ্রামিংঃ

প্রোগ্রামিং অর্থ হলো নির্দিষ্ট সিস্টেমে কিছু সংকেত, কোড বা চিহ্ন লেখা। আর এর কাজ হচ্ছে কম্পিউটারকে বিভিন্ন ধরণের কমান্ড বা আদেশ প্রদান করা। বিভিন্ন ভাষা কেন ব্যবহার হয় তা বোঝার আগে আপনাকে বুঝতে হবে প্রোগ্রামিং ভাষা কি।

আপনি যদি কম্পিউটারকে বাংলায় বা ইংরেজিতে কিছু আদেশ দেন কম্পিউটার কিন্তু সেটা বুঝতে পারবে না। তার জন্য চাই বাইনারী কোড বা সংখ্যা। যেকোন বই যেমন ইংরেজি, হিন্দি, জাপানী বা বাংলা ইত্যাদি ভাষাতে লেখা হয়, ঠিক তেমনি প্রতিটি প্রোগ্রামও কোন না কোন একটি নির্দিষ্ট প্রোগ্রামিং ভাষাতে লেখা হয়ে থাকে, যেমন সি++জাভা ইত্যাদি।

প্রোগ্রামের লিখিত রূপটিকে সোর্স কোড বলা হয়। যিনি সোর্স কোড লিখেন তাকে প্রোগ্রামার, কোডার বা ডেভেলপার বলা হয়। প্রোগ্রাম রচনা করার সময় প্রোগ্রামারকে ঐ নির্দিষ্ট প্রোগ্রামিং ভাষার সিনট্যাক্স বা ব্যাকরণ মেনে চলতে হয়। প্রোগ্রামিং-এর ধাপগুলো যেকোন সমস্যা সমাধানের ধাপগুলোর মতোই, যে সমস্ত ধাপগুলোর মাধ্যমে কোনো কাজ বা সমস্যার অবসান ঘটানো হয় তা নিম্নরুপঃ

প্রধান ধাপগুলো হলো

  • সমস্যাকে সংজ্ঞায়িত করা,
  • ইনপুট ও আউটপুট কি হবে তা নির্বাচন করা,
  • ধারাবাহিক (ধাপে ধাপে) বর্ণনা করা (এলগরিদম লেখা),
  • ফ্লোচার্ট অঙ্কন করা,
  • প্রোগ্রামিং ভাষা নির্নয় করা ও কোড লেখা,
  • কোড কম্পাইল ও ডিবাগ করা।
  • ডকুমেন্টেশন তৈরি করা।

অন্যান্য কাজঃ

উপরোক্ত কাজগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন রকমের কাজ আছে যেগুলোর ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বা মার্কেটে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

কাজ গুলো হলোঃ

  • রাইটিং বা লেখালিখি,
  • আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট রাইটিং,‌
  • SEO মার্কেটিং,
  • ডিজিটাল মার্কেটিং,
  • ফটো, অডিও, ভিডিও ইডিটিং,
  • এডমিন জবস,
  • সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট,
  • ট্রান্সলেশন,
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং,
  • আইটি ও নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি।