আপনি যখন অনলাইনে কোনো বিজনেস শুরু করতে চান তখন সবার প্রথমে যেটা মাথায় আসে সেটা হলো সেই প্রোডাক্ট বা প্রোডাক্ট সম্পর্কিত ওয়েবসাইটের নাম ঠিক করা, যেটাকে এসইওর ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট ডোমেইন নেইম বলা হয়ে থাকে।
আপনি যখন একটি অনলাইন বিজনেস শুরু করবেন তখন আপনাকে অনেকগুলো দিক বিবেচনা করে তারপর উক্ত বিজনেস আইটেমের নাম নির্বাচন করতে হবে, যাতে সেটা আপনার প্রোডাক্টের সাথে খাপ খায়।
ওয়েবসাইট ডোমেইন নেইম নির্বাচন করার আগে যে কয়েকটি দিক বিবেচনা করবেন সেগুলো নিম্নরুপঃ
- আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কারা হবে, কত বছর থেকে কত বছর বয়সীরা হবে, সারা বিশ্বব্যাপী নাকি শুধু নিজের দেশের ভিতর থেকে অডিয়েন্স নিবেন তার একটা তালিকা তৈরি করবেন।
- আপনার অডিয়েন্সদের নিকট কি বিক্রি করতে চান? কোন ধরণের কনটেন্ট বিক্রি করতে চান? সেটা বস্তুগত নাকি অবস্তুগত সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তারপর নাম ঠিক করুন।
- আপনার কনটেন্টে বা বিজনেসে কি এমন সৃজনশীলতা আছে যেটা বাজারের অন্যদের কনটেন্টে নেই, সেটা মার্ক করুন। তারপর সেটার সাথে মিল রেখে নাম এবং ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন নেইম ঠিক করুন।
অনেকেই হয়তো ভেবে থাকেন যে, ডোমেইনে কীওয়ার্ডস থাকা টা অত্যন্ত জরুরী। আসলেই সেটা জরুরী, কিন্তু সেটা শুধু ডোমেইন নেইমকে ছোট আকারে রাখার জন্য, মনে রাখার মতো এবং হাইফেন মুক্ত রাখার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডোমেইন নেইমে কীওয়ার্ডস ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে অন্যান্য প্রতিযোগীদের তুলনায় খুব ভালো ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। আপনার ডোমেইন নেইমে কীওয়ার্ডস থাকার কারনে সার্চ ইঞ্জিন লিস্টিং এবং পেইড এডস গুলোতে “ক্লিক থ্রো রেটস” বাড়াতে পারবেন এবং সেই সাথে কীওয়ার্ডস সমৃদ্ধ বিবরণমূলক ইনবাউন্ড লিংকগুলো পেতে কীওয়ার্ডস গুলো ব্যবহার করা সহজ হয়ে যায়।
সব সময় লম্বা এবং কনফিউজিং ডোমেইন নেইম চুজ করা থেকে বিরত থাকুন। যদিও অনেকেই তাদের ডোমেইন নেইমের ওয়ার্ডগুলিকে হাইফেন বা ড্যাশ দিয়ে আলাদা করে থাকেন। একটা সময় ছিলো যখন ডোমেইন নেইমকেই র্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে ধরা হতো, কিন্তু এখন সার্চ ইঞ্জিন এডভান্সড লেভেলের হয়ে যাওয়ায় এবং এতে উন্নত মানের ফিচার সংযুক্ত হওয়ার ফলে এখন আর ডোমেইন নেইমকে আগের মতো তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
আপনার ডোমেইন নেইমে দুই থেকে তিনটি কীওয়ার্ডস রাখলে ভালো হয় যাতে সেগুলো খুব সহজেই মনে রাখা যায়। অনেকগুলো ওয়েবসাইট আছে যারা নিজেদের কিছু কীওয়ার্ডস তৈরি করে এবং সেগুলো তাদের ব্র্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে ভীষণ কাজে আসে। যেমনঃ Google, Wikipedia, Slashdot, Expedia, Fark, Yahoo!, & eBay সহ আরোও অনেক।
আপনার ডোমেইন নেইম টা এতটাই সহজ ও বোধগম্য হওয়া উচিত, যাতে যে কেউ একবার শুনেই সেটা বুঝে যেতে পারে যে এর বানান কিরকম হবে এবং এর দ্বারা কী কী সার্ভিস পেতে পারে।
Guru Mantra (গুরু মন্ত্র) –
এখন ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন নেইম নির্বাচনের আগে আপনাকে কিছু প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারবেন তো? যদি পারবেন বলে মনে করে থাকেন তাহলে নিম্নোক্ত গুরু মন্ত্রের প্রশ্নের উত্তর গুলো দিয়ে যানঃ
- আপনি কেন আপনার জন্য একটি ওয়েবসাইট বিল্ড করতে চাচ্ছেন?
- আপনার ওয়েবসাইটে কি এমন আছে যেটা অন্য ওয়েবসাইটে নেই এবং ক্রেতারা কেন অন্য ওয়েবসাইট থেকে না কিনে শুধু আপনার ওয়েবসাইট থেকেই কিনবে?
- আপনার ওয়েবসাইটটি কেন অন্যদের থেকে আলাদা সে বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
- আপনি আপনার কাস্টমারদের নিকট কি বিক্রি করতে চান এবং তাদের বয়স কত থেকে কত হবে সেটা বলুন এবং সেই সাথে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কারা সেটাও বলুন।
- কমপক্ষে ৫ টা থেকে ১০ টা ওয়েবসাইটের নামের তালিকা তৈরী করুন যেটা আপনার কাছে অসাধারণ লেগেছে এবং কেন লেগেছে সেটা নিয়ে একটু ডিটেইলসে চিন্তা করুন।
- আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আলাদা আলাদা ৫ টি নাম ঠিক করুন, সেগুলোর মধ্যে অন্তত একটা নাম খুব মজার রাখুন যেটা শুনতে কিছুটা ফানি লাগে। তারপর সেগুলো এমন সব লোকদের মাঝে শেয়ার করুন যাদের আপনি তেমন ভালো করে চিনেন না। ৮ থেকে ১০ জনের মতো অচেনা লোকেদের সাথে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য নির্ধারিত করা নামগুলো শেয়ার করুন এবং দেখুন কতজন কোন নামটাকে বেশি মনে রাখতে পেরেছে। তারপর আপনি নিজেই বুঝে যাবেন যে কোন নাম টা রাখলে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ভালো হবে।
- অতঃপর আপনার ওয়েবসাইটের জন্য উক্ত নামটি সিলেক্ট করুন যেটা মানুষ খুব সহজে মনে রাখতে পারে এবং আপনার বিজনেসের সাথে খাপ খায়।
আশা করি উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রাখলে এবং গুরু মন্ত্রগুলোর উত্তর দিতে পারলে আপনি খুব সহজেই আপনার ব্যবসার জন্য একটা ওয়েবসাইট ডোমেইন নেইম কিনে ফেলতে পারবেন।