আজকের এই আর্টিকেলটি এস ই ও পর্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল হতে যাচ্ছে। কারন আজকের এই আর্টিকেলটিতে ম্যাটাট্যাগ নিয়ে আলোচনা করা হবে, সেই সাথে ম্যাটাট্যাগ কি, কাকে বলে, এর প্রকারভেদ, ব্যবহার এবং এর গুরুত্ব বা উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আপনার যদি ম্যাটাট্যাগ সম্পর্কে কোনো ধারণা না থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়বেন।
ম্যাটাট্যাগ কি?
ম্যাটাট্যাগ হলো এক ধরণের এইচটিএমএল কোড। যার মাধ্যমে একটা কন্টেন্টের ন্যাচার সম্পর্কে জানা যায়। একটি ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেইজের সকল তথ্যের সমষ্টি হলো এই ম্যাটাট্যাগ। এর সাথে অনেকগুলো বিষয় জড়িত থাকে, যেমনঃ কন্টেন্টের নাম, কিওয়ার্ড, বিবরণ, মালিকের নাম, রোবটস ইত্যাদি।
অর্থাৎ সহজ কথায়, ম্যাটাট্যাগ এর কাজ হলো ভিজিটর বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কোনো ওয়েবসাইটে বা ওয়েবপেইজের সাথে গুগল ও সার্চ ইঞ্জিনের সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে কন্টেন্টসমূহকে ইনডেক্সিং করা।
ম্যাটাট্যাগ কাকে বলে?
এই ম্যাটাট্যাগকে অন পেইজ – এসইও এর অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে একটি ধরা হয়। ম্যাটাট্যাগ কাকে বলে সেটাকে একটা উদাহরণের মাধ্যমে বুঝানো যাক –
“ধরুন, আপনি একটি ওয়েবসাইটের মালিক। এখন আপনি চাচ্ছেন আপনার ওয়েবসাইটটিতে প্রচুর পরিমাণের ভিজিটর বাড়াতে। তার জন্য অনেক এস ই ও মূলক কর্মকাণ্ড করলেন। কিন্তু যতক্ষন না আপনি ম্যাটাট্যাগ ব্যবহার করছেন, ততক্ষন কিন্তু আপনার ভিজিটর বাড়বে না। কারণ এই ম্যাটাট্যাগই আপনার কন্টেন্টের জন্য ভিজিটর নিয়ে আসে”।
অর্থাৎ, একটি ব্লগ সাইট কিংবা কন্টেন্টের ভিজিটর বাড়ানোর জন্য যে সমস্ত কার্যপদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তাকেই ম্যাটাট্যাগ বলে।
ম্যাটাট্যাগের প্রকারভেদ ও ব্যবহার –
ম্যাটাট্যাগের ধরণকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ ১। ম্যাটা ডিস্ক্রিপশন ট্যাগস, ২। ম্যাটা কিওয়ার্ড ট্যাগস।
১। ম্যাটা ডিস্ক্রিপশন ট্যাগসঃ আপনি যত ট্যাগই ব্যবহার করেন না কেন, ম্যাটা ডিস্ক্রিপশন ও ম্যাটা কীওয়ার্ড ট্যাগের চেয়ে ভালো কোনো এইচটিএমএল ট্যাগ নেই। এ ব্যাপারে অনেকের অনেক ভিন্ন ভিন্ন মত থাকতেই পারে, সেটা যার যার ব্যক্তিগত ওপিনিয়ন।
সব কিছুরই একটি লিমিট থাকে, ম্যাটা ডিস্ক্রিপশন ট্যাগও সেটার ঊর্ধ্বে নয়। ম্যাটা ট্যাগের একটি লিমিটেশন হলো আপনি আপনার সাইট বা কন্টেন্টের জন্য বড়জোড় ১৫০ – ১৬০ পর্যন্তই ডিস্ক্রিপশন লিখতে পারবেন, এর বেশি লিখলে সেটা ওয়েবসাইট বা কন্টেন্টের জন্য অতটা ভালো হবে না।
২। ম্যাটা কিওয়ার্ড ট্যাগসঃ এই ট্যাগটিই একটি ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব বহন করে। অনেক ব্লগার বা সাইট এডমিনরা ভিজিটর বাড়ানোর আশায় একগাদা কিওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকে, কিন্তু এতে লাভ তো হয়ই না বরং ক্ষতি হয়। কারন এতো বেশি পরিমাণ কিওয়ার্ড ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিনে সেগুলো পেছনে পড়ে যায়।
তাই এতো বেশি কিওয়ার্ড ব্যবহার না করে গুঁটি কয়েক ভালো মানানসই কিওয়ার্ড ব্যবহার করলে কোনো ক্ষতি নেই, হোক সেটা ৪-৫ টা কিংবা ১০-১২ টা। তাতে অন্তত ভালো রেসপন্স তো আসবে? সেটাই বা কম কিসের?
উপরোক্ত দুটি প্রধান ট্যাগ ছাড়াও আরোও কয়েকটি ট্যাগ আছে যেগুলোর সম্পর্কে পরিচিত হয়ে থাকা ভালো। সেগুলোও বেশ উপকারী ট্যাগই বটে।
৩। ম্যাটা অথরিটি ট্যাগসঃ যদিও এটা ব্যবহার করা এতোটাও জরুরী নয়, তবুও অনেকেই চায় তার সাইটের সাথে মালিক হিসেবে নিজের কিংবা ওয়েবসাইটের নামটাও ম্যাটাট্যাগে থাকুক, সেই হিসেবেই অনেকে দিয়ে থাকে। এতে করে ব্লগ বা সাইটের কোনো ক্ষতি হয়না বরং কিছুটা হলেও পরিচিতি বাড়ে, সেটাই অনেক।
৪। ম্যাটা রোবট ট্যাগসঃ কন্টেন্ট চুরি বা হারানোর ভয় থেকে আপনি সবসময়ই চাইবেন যাতে কোনো রোবট আপনার কন্টেন্টকে সার্চ ইঞ্জিনে ইন্ডেক্স না করে। তখন রোবটের সেই ইন্ডেক্সিং বা সূচনা করা থেকে বিরত থাকতে Do Follow এবং No Follow এর ব্যবহার করা হয়।
তবে আপনাকে আমার একটি পরামর্শ থাকবে, যদি আপনি কিওয়ার্ড সম্পর্কে অনভিজ্ঞ থাকেন তাহলে উক্ত কিওয়ার্ডগুলো ব্যবহার না করাই ভালো। কারন আপনার একটা ছোট্ট ভুলের কারনে কিংবা কিওয়ার্ডের ভুল ব্যবহারের কারনে সার্চ ইঞ্জিন হতে আপনার সকল ভিজিটর হারাতে পারেন।
ম্যাটাট্যাগের গুরুত্ব বা উপকারিতাঃ
ব্লগসাইটে বা ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর ক্ষেত্রে ম্যাটাট্যাগের কোনো জুড়ি নেই। সাধারণত ভিজিটর বাড়ানোর জন্য ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের সাথে ফ্রেন্ডলিভাবে অপ্টিমাইজ করা হয়। যাতে উক্ত ওয়েবসাইটের সমস্ত কন্টেন্টগুলোর সম্পর্কে যদি কেউ গুগলে সার্চ করে তাহলে যাতে সবার প্রথমে উক্ত কন্টেন্টগুলোই প্রদর্শিত হয়। এভাবে নিত্য নতুন ভিজিটর পাওয়া মানেই আপনার ওয়েবসাইট সফল।
যখন গুগল ম্যাটাট্যাগযুক্ত কোনো কন্টেন্টের ইন্ডেক্সিং বা সূচনা করতে পারে তখনই সেটা সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করায় এবং সবার প্রথম কাতারে থাকে, কারন গুগল উক্ত কন্টেন্ট সম্পর্কে বুঝতে পেরেছে বলেই বলেই ইন্ডেক্স করতে পেরেছে। যদি না বুঝতে পারতো তাহলে ইন্ডেক্স করতে পারতো না, ফলে উক্ত কন্টেন্টের র্যাংকিং ও হতো না, আর সেটাই ম্যাটাট্যাগের বিশেষত্ব।
তাই ম্যাটাট্যাগের ব্যবহার একটি সাইট বা কন্টেন্টের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, অন্যথায় কোনো আর্টিকেল বা পোস্টই গুগলে Index (সূচনা) হবে না।
যেভাবে ম্যাটাট্যাগ তৈরি করবেন –
<meta name=”description” content=” এখানে আপনার বা আপনার client এর সাইটের বর্ণনা দিন” />
<meta name=”keywords” content=” এখানে আপনার বা আপনার client এর সাইটের keyword গুলো কমা দিয়ে লিখুন” />
<meta name=”author” content=” এখানে আপনার বা আপনার client এর সাইটের যিনি মালিক তার নাম লিখুন” />
ম্যাটাট্যাগগুলো দেখতে যেরকম দেখায় –
<meta name=”keywords”
content=”KEYWORD1 KEYWORD2 KEYPHRASE1 etc.
about 30 to 40 unique words”>
<meta name=”description”
content=”An accurate, keyword-rich description
about 150 characters”>
তো এই ছিলো এস ই ও – অপ্টিমাইজড ম্যাটাট্যাগস (০৭) পর্বের বিস্তারিত আলোচনা। আশা করছি এই ব্যাপারে আপনাদের আর কোনো প্রশ্ন নেই। পরবর্তী আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।