কীওয়ার্ড হলো এমন একটি শব্দ যেটা একটা নির্দিষ্ট তথ্য বহন করে। যখন কেউ কোনো তথ্য সম্পর্কে জানার জন্য সার্চ ইঞ্জিনে তার কাঙ্ক্ষিত কীওয়ার্ডটি লিখে সার্চ করে, তখন সেই সার্চকৃত কীওয়ার্ডটির সাথে রিলেটেড কন্টেন্টসমূহগুলো সার্চ ইঞ্জিন ফলাফল আকারে ফেরত দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ দুই থেকে পাঁচটি শব্দ বা কীওয়ার্ডকে সম্মিলিত ভাবে ফ্রেইজ আকারে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে থাকে। এই সার্চকৃত কীওয়ার্ডগুলোকে সাধারণত Search Phrases, Keyword Phrases, Query Phrases, বা শুধু Keyword বলা হয়ে থাকে। তবে ভালো কীওয়ার্ড ফ্রেইজ গুলো আরোও সুনির্দিষ্ট ও বর্ণনামূলক হয়ে থাকে।
নিম্নে লিখিত কনসেপ্টগুলো কীওয়ার্ড সম্পর্কিত একটি ওয়েবপেইজকে অপ্টিমাইজ করতে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে থাকে।
কীওয়ার্ড ফ্রিক্যুয়েন্সি (Keyword Frequency):
ওয়েবসাইটের Heading বা Description এ কোন কীওয়ার্ড বা কীওয়ার্ড বাক্যাংশ একটি ওয়েব পেজ বা পেজ কন্টেন্টের কোনো অংশে কতবার প্রদর্শিত হয় তার হিসাব রাখার প্রক্রিয়াকে কীওয়ার্ড ফ্রিক্যুয়েন্সি বলে। এখানে একটি কীওয়ার্ড কতবার প্রদর্শিত হয় তা গণনা করে হিসাব রাখা হয়, আবার Spamming ‘স্প্যামিং’ বা Keyword Stuffing ‘কীওয়ার্ড স্টাফিং’ যেন না হয় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়। কারণ আপনি কখনোই শাস্তিযোগ্য এমন কোনো অপরাধ করতে চাইবেন না যার কারনে আপনাকে কিছুদিনের জন্য সাসপেন্ডেড হতে হয়। যেমন – বার বার একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি করলে সার্চ ইঞ্জিন সেটাকে স্প্যামিং বা কীওয়ার্ড স্টাফিং এর আওতায় নিয়ে আসে।
যদিও সাধারণভাবে ডকুমেন্টের কীওয়ার্ডগুলোকে যতটা সম্ভব Repeat ‘রিপিট’ করার বাধ্যবাধকতা আছে, তার সাথে Meta Tag ‘মেটাট্যাগের’ লিস্টে ৩ থেকে ৭ বার পর্যন্ত রিপিট করারও স্বাধীনতা আছে।
কীওয়ার্ড প্রক্সিমিটি (Keyword Proximity):
এখানে কীওয়ার্ড প্রক্সিমিটি বলতে ওয়েবপেইজ এবং কীওয়ার্ড দুটো একে অপরের সাথে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হওয়াকে বুঝায়। অথবা কিছু কিছু ক্ষেত্রে, সার্চকৃত অন্যান্য কীওয়ার্ড যেগুলো একই অর্থ বহন করে সেগুলোকেও বুঝায়। দুটি কীওয়ার্ড একে অপরের যতো কাছাকাছি সেই বাক্যাংশের Weight ও ততো বেশি।
কীওয়ার্ড প্রমিনেন্স (Keyword Prominence):
কীওয়ার্ড প্রমিনেন্স বলতে আপনার মূল কীওয়ার্ডকে Heading বা টাইটেলের কোন অংশে রাখতে চাচ্ছেন সেটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া। যার অর্থ হলো মূল কীওয়ার্ডটা আপনার (URL) ‘ইউআরএল’ এর প্রথম অংশে আছে নাকি শেষের অংশে আছে, অথবা আপনার কন্টেন্টের প্রথম প্যারাগ্রাফে আছে নাকি শেষের প্যারাগ্রাফে আছে সেটাই গুগলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
অর্থাৎ, আপনার কনটেন্টের Sentence, Web page, h1 Tag, Title বা যেকোনো জায়াগায় ই হোক না কেন ঐ মূল কীওয়ার্ডটার উপস্থিতি থাকতেই হবে।
কীওয়ার্ড প্লেসমেন্ট (Keyword Placement):
কীওয়ার্ড প্লেসমেন্ট হচ্ছে আপনার কনটেন্টের মেইন কীওয়ার্ডটা কোথায় কোথায় প্লেস করা হচ্ছে বা রাখা হচ্ছে সেটা নির্দিষ্ট করা। আপনার মেইন কীওয়ার্ডটিকে কনটেন্টের যেকোনো জায়গায় রাখতে পারেন, হোক সেটা কন্টেন্টের লিংকে, কনটেন্টের ছবিতে, মেটা ডিস্ক্রীপশনে, প্যারাগ্রাফের শুরুতে কিংবা কনটেন্টের শেষে।
আপনার মেইন কীওয়ার্ডকে যে জায়গায় রাখা উচিত, সে জায়গাগুলোর নাম নিচে দেওয়া হলো। যেমন –
[ title ] tag(s).
[ meta name = “description” ].
[ meta name = “keyword” ].
[ h1 ] or other headline tags.
[a href = “http://yourcompany.com“] keywords[/a]
link tags
Body Copy.
alt tags.
[!– insert comments here] comments tags.
URL or Website Address.
কীওয়ার্ড খোঁজা (Finding Keywords):
আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য অনেকভাবে কীওয়ার্ড খুঁজতে বা রিসার্চ করতে পারেন। এতে আপনার প্রোফাইল, ওয়েবসাইট বা কন্টেন্টের র্যাংক খুব দ্রুততার সাথে বাড়তে থাকবে। কীওয়ার্ড খোঁজার কিছু টেকনিক সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো। যেমন –
১। মানুষ আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস যেন খুব সহজেই খুঁজে পেতে পারে তার জন্য সেই পন্য বা সেবা রিলেটেড একটি সম্ভাব্য কীওয়ার্ড খুঁজুন।
২। আপনার প্রতিযোগী ওয়েবসাইটের থেকে পেইজের সেম্পল ও কীওয়ার্ড ট্যাগ সংগ্রহ করতে পারেন।
৩। সার্চ ইঞ্জিনে সাজেস্ট করা টপ কীওয়ার্ডগুলো নিতে পারেন।
৪। কোনো অনলাইন টুল ব্যবহার করার মাধ্যমে কীওয়ার্ড সংগ্রহ করা। যেমনঃ Google Keyword Tool
৫। একজন এসইও এক্সপার্টকে দিয়ে ওয়েবসাইটের জন্য কপিরাইটার করা যেতে পারে, বা কীওয়ার্ড রিসার্চ করে সংগ্রহ করা যেতে পারে।
৬। আপনার সাইটের জন্য কোন কীওয়ার্ডটি সঠিক কীওয়ার্ড হবে বলে মনে হয়, সেটা ঠিক করতে ব্রেনস্টর্মিং করুন।
ওয়ার্ড স্টেমিং (Word Stemming) কি?
ওয়ার্ড স্টেমিং বলতে এখানে একটা কীওয়ার্ডের সাথে অন্যান্য কীওয়ার্ডের মূলভাবগুলোর মিল থাকাকে বুঝায়। যেমন ধরুন – Chocolate ব্র্যান্ডের আরোও বিভিন্ন নাম আছে যেগুলোর অর্থ ঐ Chocolate কেই বুঝায়। যেমনঃ Chocolatey, Choco, Cho-Cho ইত্যাদি। অর্থাৎ একটা কীওয়ার্ডকে চাইলে তার সামনে বা পিছনে কিছু শব্দ বসিয়ে সেটার অর্থকে পরিবর্তন না করেই ভিন্ন ভিন্ন নাম তৈরি করার পদ্ধতি যেটা আসলে একই ভাবমূর্তি বহন করে।
ওয়ার্ড স্টেমিং যেভাবে কাজ করে তার একটা ছোট্ট উদাহরণ দেয়া যাক – ধরুন “আপনি সার্চ ইঞ্জিনে ‘হাউজ প্ল্যান’ লিখে সার্চ করলেন। এখন গুগল এই কীওয়ার্ডসহ তার সাথে একই অর্থ বহন করে এমন আরো অনেকগুলো কীওয়ার্ড এর পেইজ বা তথ্য আপনার সামনে তুলে ধরবে, যেমনঃ হাউজ প্ল্যান, হাউজ প্ল্যানার, হাউজ প্ল্যানিং, প্ল্যানিং ফর হাউজ ইত্যাদি যেগুলোর অর্থ এক হলেও কীওয়ার্ড কিন্তু আলাদা আলাদা”।
তো এই ছিলো আজকের এস ই ও – অপ্টিমাইজড কীওয়ার্ডস পর্ব (০৬) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। পরের পর্বটি পড়ার আমন্ত্রণ রইলো, ধন্যবাদ।