ফ্রিল্যান্সিং কেন করব ? নতুনদের জন্য গাইডলাইন - Bhairab IT Zone

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

আমরা ফ্রিল্যান্সিং কেন করব? জীবনযাত্রার তাগিদে মানুষ কতো কিছুই না করছে। কেউ চাকুরী করছে, কেউ ব্যবসা করছে, কেউ ওকালতি করছে, তো ফ্রিল্যান্সিং করছে।

এই সব কিছু করার পিছনে সবার একটাই লক্ষ্য একটাই উদ্দেশ্য, আর সেটা হলো “টাকা উপার্জন করা”। দিন যত পাল্টাচ্ছে মানুষের চাহিদাও ততো বাড়ছে।

আগেকার মানুষদের এতো চাহিদা ছিলো না বিধায় তাদের সুখের ও কমতি ছিলো না। সবার নিজ নিজ জমি ছিলো, সেখান থেকে ফসল-শাকসবজি-ফলমূল উৎপাদন করেই দিনাতি পাত করে ফেলতো।

আস্তে আস্তে দিন বদলাতে শুরু করল, টেকনোলোজির ব্যবহারও বাড়তে শুরু করল, সেই সাথে বদলাতে শুরু করল মানুষের ভাবমূর্তি ও দৃষ্টিভঙ্গি।

সৃষ্টি হতে লাগলো কে কার থেকে বেশি পাবে, কে কার থেকে এগিয়ে থাকবে সেই প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব, যেটা এখনোও পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

আর সেজন্যই মানুষ প্রতিনিয়ত কাজের সন্ধানে ছুটে চলেছে, কেউ দেশের ভিতরে তো কেউ দেশের বাহিরে। সবারই প্রায় একই উদ্দেশ্য, আর সেটা হলো অনেক টাকা রোজগার করতে হবে, নিজের পায়ে দাড়াতে হবে, নিজের পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে, নিজের সন্তানাদির ভবিষ্যত গড়ে দিতে হবে সহ আরোও কতো কি! কিন্তু সব কাজেই কি সন্তোষটিজনক টাকা পাওয়া যায়? অবশ্যই না।

আপনি যদি চাকুরী করেন তাহলে একটি নির্দিষ্ট পরিমান মাসিক ইনকাম পাবেন, যদি বিজনেস করেন তাহলে তাহলে লাভ-ক্ষতি-ঝুঁকি সব মিলিয়ে ইনকামের গড়মিল থাকবেই, আর যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন তাহলে আপনি আপনার ইনকামকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

নিজের ইচ্ছেমত কাজ করে নিজের ইচ্ছেমত টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আসুন তাহলে জেনে নিই আপনি কেন ফ্রিল্যান্সিং করবেনঃ- 

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং এ কোন ধরণের কাজ করবেন?

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং- এ দক্ষ হওয়ার জন্য কি কি করবেন?

ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন ? 

ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি স্বাধীন বা মুক্ত পেশা। এই পেশাই আপনি যখন খুশি কাজ করতে পারবেন, যখন খুশি ছুটি নিতে পারবেন, আবার যখন খুশি কাজ ছেড়েও দিতে পারবেন।

যদিও আপনি কখনোই এই পেশা ছাড়তে চাইবেন না, কারণ একবার যে ফ্রিল্যান্সিং এর মোহে পড়ে যায় সে আর কখনো এখান থেকে বের হতে চায় না। এর একটা না বরং অনেকগুলো কারন আছে।

সেগুলো হলো স্বাচ্ছন্দ্যতা, আত্মনির্ভরশীলতা, দাসত্বমুক্ত হওয়া, নিজেই রাজা এবং কোনো সীমাবদ্ধতা না থাকা ইত্যাদি। আমাদের সবার মধ্যেই কিছু না কিছু সুপ্ত প্রতিভা থাকে।

সেই প্রতিভা অনেক সময় সুপ্তই রয়ে যায়, আমরা যারা চাকরীর আশায় বছরের পর বছর সময় নষ্ট করে বসে থাকি তারা ইচ্ছে করলেই নিজেদের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলে তা কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করে নিজের পায়ে দাড়াতে পারি।

এর জন্য কোনো কোম্পানির বা মন্ত্রী-মিনিস্টারের নিকট সিভি নিয়ে দৌড়াতে হবে না। আপনি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন? কন্টেন্ট রাইটার হতে পারেন, আপনি ভালো নকশা আকতে পারেন? ডিজাইনার হতে পারেন, আপনি ভালো কোডিং জানেন? সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেন।

এছাড়াও আরো অসংখ্য কাজ আছে যা আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে করতে পারবেন। আপনিও চাইলে ফ্রিল্যান্সিং করে সফলতার দ্বার স্পর্শ করতে পারবেন, তার জন্য আপনার যা দরকার তা হলো উদ্যম, সাহস, ইচ্ছাশক্তি, মনোবল, নিজের উপর আস্থা ও প্রচুর আত্মবিশ্বাস।

এই জিনিসগুলো কিন্তু বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না, তাই আপনার টাকাও খরচ হবে না। যা খরচ হবে সেটা হলো ‘সময়’ ঐ যে কথায় বলে না “দ্য টাইম ইজ মানি এন্ড দ্য মানি ইজ ইক্যুয়াল টু টাইম”। টাকা রোজগার করতে হলে তো আপনাকে অবশ্যই সময় দিতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন লাগে?

আরো পড়ুনঃ কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন?

নতুনদের জন্য গাইডলাইন

আমি আগেই বলে রাখছি, আপনি যদি ভেবে থাকেন যে হঠাৎ করেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করে এক বছরের মাথায় কোটিপটি হয়ে যাবেন, তাহলে আমি বলবো যে ভাই ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য না।

কারণ কাজ করার আগেই টাকার লোভ আপনাকে পেয়ে বসেছে, আপনি আর এগোতে পারবেন না। আপনি যদি আপনার প্রতিভাকে কাজে লাগানোর জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার কথা ভাবেন তাহলে অবশ্যই আপনার থেকে বড় কারোর কাছ থেকে আগে পরামর্শ নিবেন, যারা এই সেক্টরে আছেন তাদের থেকে টিপস নিবেন, তারপর অনলাইনে এটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করবেন, ভিডিও টিউটোরিয়াল সংগ্রহ করবেন, ফ্রি কোর্স করার সুযোগ থাকলে করে ফেলবেন।

তারপরেও যদি কোনো রকম সমস্যা বা কনফিউশন থেকে থাকে যা আপনি সমাধান করতে পারছেন না, তাহলে চলে আসতে পারেন “ভৈরব আইটি জোন” নামক ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং সেন্টারে। এখানে অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের দ্বারা প্রফেশনাল ভাবে হাতে কলমে শিক্ষার্থীদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

আপনি চাইলে এখনই তাদের ফ্রি সেমিনার এর জন্য আবেদন করতে পারেন এখান থেকে, এবং সকল কোর্সসমুহ সম্পর্কে জানুন

যেকোনো কঠিন কাজের প্রস্তুতির জন্য বা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য একজন মেন্টর থাকা অতীব জরুরী। কারন একজন মেন্টরই আপনাকে নিঃস্বার্থভাবে আপনাকে প্রেষণা যোগাতে সাহায্য করবে। তাছাড়া আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে দৈনিক ৮-১০ ঘন্টা করে সময় দিতে হবে।

আপনাকে অবশ্যই আগে কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিতে হবে, ইন্টারনেট কিভাবে চালায়, ব্রাউজ কিভাবে করতে হয়, ছোটখাটো ইন্টারনেট হেক্স সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিতে হবে, ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে (মোটামুটি হলেও চলবে), ধৈর্য ধরার মন মানসিকতা রাখতে হবে, অল্পতেই ভেঙ্গে পড়া যাবেনা, নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে এবং প্রতিদিন একটা করে হলেও মোটিবেশনার ভিডিও দেখা চালিয়ে যেতে হবে।

তবেই দেখবেন যে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে ধীরে ধীরে আপনি সফল হতে যাচ্ছেন। প্রথম প্রথম অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং শেখাকালীন সময়ে কমপক্ষে ৬ মাস ফ্রী তে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কাজ করে দিবেন যাতে আপনার কোনো ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখা হয়, এভাবেই কাজ করতে করতে দেখবেন যে আস্তে আস্তে আপনি সেই কাজে দক্ষতা অর্জন করে ফেলেছেন।

তারপর থেকে আপনি আত্মবিশ্বাসের সাথে পেমেন্টের বিনিময়ে কাজের জন্য অফার দিতে পারবেন বা বিড করতে পারেন। 

উপরে উল্লেখিত গাইডলাইন অনুযায়ী যদি আপনি চেষ্টা চালিয়ে যান তাহলে আপনাকে এইটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি যে আপনাকে কখনো কোনোদিন ঠেকতে হবে না বা আফসোস করতে হবে না।

আপনি নিশ্চিন্তে আপনার বাকি জীবনটা নিজের পরিবারের সাথে হাসি খুশি ভাবে কাটিয়ে দিতে পারবেন।